স্বার্থ
বিজয় কুমার দাস
দু’দিনের আসা যাওয়ার এই যে খেলাঘর,
ভাবা কেন কেউ বা
আপন আবার কেউ পর।
সবাই আমরা আপন আর
এই জগৎ সবাকার,
বিনি সুতো দিয়ে
গাঁথা এই বিশ্ব সংসার।
সকলের ত্বরে সকলে
আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের ত্বরে,
এই মূলমন্ত্রটি
ফিরুক সবার মনে ও প্রতি ঘরে ঘরে।
এসব তো কথার কথা
বললাম যা আগে,
বাস্তবে এসবই আছে
বিয়োগে এবং ভাগে।
আজ যে আপন কাল
সেতো পর হয়ে যায়,
আবার যে পর ছিল
ভাই আপন হতে চায়।
আপন পরের ছেলে
খেলার এই যে বাগাডুলি,
কখনো ভাল কখনো
মন্দ কেবল স্বার্থান্বেষী বুলি।
অত্যাশ্চর্য
সৃষ্ট এই যে জীব আমরা মানুষ,
কখনো কখনো হারিয়ে
ফেলি মান আর হুঁশ।
বেহুঁশ এক মাতালও
জানে নিজের ভাল মন্দ,
নিজগুণে ব্যাহত
করি আপন চলার ছন্দ।
মানসম্মান নিজের
কাছে আবার নিজের উপর নির্ভর,
লোকে বলুক
দুর্মতি তাতে পরোয়া করাই ভার।
বিবেক যদি সায়
দেয়, লোকের কথায় কি আর ভাই,
ভেবে নিয়ো পরের
কথায় কি বা আসে যায়।
পেয়েছো কি কখনো
আপন জনের কাছে চরম আঘাত,
শোকানলে দহন করে
এ কঠিন বজ্রাঘাত।
শোকানলে পুড়বে
নিজে জানবে না তো কেউ,
প্রতিবেশী লাগবে
জেনো পেছনে মস্ত ফেউ।
যেদিন তোমার মুখে
পড়বে মিথ্যে অপবাদের চুনকালি,
পাড়াপড়শি
আনন্দেতে দেবেই দেবে হাততালি।
এ সকলকে তোয়াক্কা
না করে যদি স্থান পাও উচ্চে,
সকলে দেবে গালি
আর অভিশাপ তোমার পিছে।
এরপরও যদি তুমি
চাও পাড়াপড়শির ভালো,
সকলে বলবে এই
বদটার মতলবটাই কালো।
সকলের ত্বরে সকলে
নই আমরা প্রত্যেকে আমরা নিজের ত্বরে,
সুখ সমৃদ্ধি
প্রত্যেকেই চায় আপন আপন ঘরে ঘরে।
বিষকুম্ভম্ পয়োমুখম্
পার যদি ভাই হতে,
সকলে বলবে এমন
মানুষ হাজারে একটা জোটে।
মিথ্যে প্রলোভনে
যদি করতে পারো বশ,
দিনকে দিন বাড়বে
তোমার খ্যাতি ও নামযশ।
করেছো কি জীবনে
কভু হৃদয় নিয়ে কারবার,
নচিকেতার কথায়
শেখো লোকসান বারবার।
হৃদয় সে তো
মামুলি এক সিন্ধুর মাঝে বিন্দু,
এই বিন্দুই
সৃষ্টি করে মহাপ্রলয়কারী সিন্ধু।
কারেও যদি ফেলতে
দাও স্বস্থির নিশ্বাস,
তোমারই বুকে
হানবে জেনো চরম সর্বনাশ।
সকল কিছুকে
পরাস্ত করে যদি করো উন্নতি,
আর সকলে চাইবে
তোমার চরম অবনতি।
( কোরাস : )
সকল ব্যাপারে নাক
গলিয়ে আমরা সকলেই দেব ব্যাগড়া,
আসলে আমরা হলাম
সকলে হিংসেপ্রবণ বাঙালি কাঁকড়া।
[ পুনশ্চ : ]
ছোটো মুখে বড়ো
কথা করলাম তর্জমা,
এই জন্য চাইছি
আমি ক্ষমা ও মার্জনা।
© Bijoy Kr Das. All
Rights Reserved.

No comments:
Post a Comment